কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব প্রতিনিধি : মেমারি :
ভোরের আলো ফোটার আগেই তীব্র চিৎকারে কেঁপে উঠল পূর্ব বর্ধমানের মেমারির একটি শান্ত পাড়া। যখন বহু ঘরেই চায়ের কেটলি তখনও চাপেনি, তখনই রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখা গেল এক প্রৌঢ় দম্পতির রক্তাক্ত দেহ। গলার নলি কাটা — পাশেই রক্তের ধারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দম্পতির নাম এখনও সরকারিভাবে ঘোষণা না হলেও, তাঁরা ওই এলাকার পুরনো বাসিন্দা। বয়স ৫০-এর কোঠায়। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার ভোরবেলা রান্নাঘরের দিকে যাওয়ার সময় প্রতিবেশী এক মহিলার নজরে আসে রাস্তায় রক্ত। এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান, দেহ পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় মেমারি থানায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সোমবার গভীর রাতে খুনের পর দেহ রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যায় আততায়ীরা। ঘরের দরজায় ভাঙচুরের চিহ্ন মিলেছে। তবে ঘরের ভেতরে কোনও লুটপাট হয়নি বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দম্পতির সঙ্গে সম্প্রতি পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত কিছু ঝামেলা চলছিল। যদিও পুলিশ এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। ঘটনার তদন্তে নামানো হয়েছে ফরেনসিক দল। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাড়ির আশপাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ।
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান,
“ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ, জুতোর ছাপ এবং একটি ভাঙা মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। এগুলিই আপাতত আমাদের ক্লু। খুনের ধরণ অত্যন্ত পরিকল্পিত মনে হচ্ছে।”
জোড়া খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় রাতের দিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই নেই। পাড়ায় পর্যাপ্ত স্ট্রিটলাইট নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মেমারি থানার ওসি জানিয়েছেন,
“এটি স্পষ্টতই একটি পরিকল্পিত খুন। তবে এটি ডাকাতির উদ্দেশ্যে হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে। রিপোর্ট হাতে আসার পর আরও তথ্য মিলবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে এমন ভয়াবহ খুন নিঃসন্দেহে অশনি সঙ্কেত। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারের কোনও খবর না মিললেও, পুলিশ আশ্বস্ত করছে, অপরাধীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।