কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব সংবাদদাতা : ভুবনেশ্বর
ড্রোনে তোলা ছবি গিয়েছে শত্রু দেশের হাতে, সন্দেহে কড়া নিরাপত্তা বলয়
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উপর ঘোরতর ষড়যন্ত্রের ছায়া। ড্রোনে তোলা মন্দির চত্বরের গোপন ছবি পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার হাতে পৌঁছে গিয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। সন্দেহভাজন ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার বিরুদ্ধে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ওডিশা সরকার। দ্রুত সুরক্ষা জোরদারের অংশ হিসেবে মন্দির চত্বরে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক ‘অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম’।
রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন বুধবার বলেন, “জগন্নাথ মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও অনুমোদনহীন ড্রোন উড়তে পারবে না। সন্দেহজনক কিছু শনাক্ত হলে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই নিষ্ক্রিয় করা হবে।” তিনি জানান, সিস্টেমটি ড্রোন চিহ্নিত করে তা ট্র্যাক করে নামিয়ে দিতে পারবে। প্রয়োজনে এই প্রযুক্তির জন্য তহবিল দেবে জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন।
পাক গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা গত বছর পুরী সফরে এসে স্থানীয় ইউটিউবার প্রিয়াঙ্কা সেনাপতির সহায়তায় ড্রোন ব্যবহার করে মন্দিরের গোপন ছবি ও ভিডিও তোলেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সমস্ত দৃশ্য পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের কাছে পৌঁছে গেছে বলে আশঙ্কা।
যদিও প্রিয়াঙ্কা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাতেও রক্ষা হয়নি। গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশের ভৌগোলিক তথ্য এই ফাঁসের মাধ্যমে শত্রু দেশের হাতে পৌঁছে যেতে পারে।
এই ঘটনার পরই ওডিশা সরকার পুরী এবং আশপাশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মস্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। শুধুমাত্র জগন্নাথ মন্দিরেই মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ২৪০ জন পুলিশ কর্মী। পাশাপাশি, নবগঠিত ‘শ্রী মন্দির সুরক্ষা বাহিনী (SSMSV)’-এর জন্য দ্রুত কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। ওই বাহিনীতে এক হাজারের বেশি সশস্ত্র রক্ষী থাকবেন বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, জগন্নাথ মন্দিরে ছবি তোলা, বিশেষ করে ড্রোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দ্বাদশ শতকে নির্মিত এই ঐতিহাসিক মন্দির দেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। তাই এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের এই পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
পাহেলগাম হামলার পর দেশের ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র। সেই তালিকায় বিশেষ নজরদারিতে রয়েছে পুরীর শ্রীমন্দির।