কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব সংবাদদাতা :
দিঘা-নন্দকুমার সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় অটো দুমড়ে-মুচড়ে, দুই জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে !
দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ফিরছিলেন দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু সড়কপথে সেই যাত্রা শেষ হল মৃত্যুর মিছিলে। বৃহস্পতিবার ভোরবেলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা–নন্দকুমার জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচজনের, যাঁদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের। আহত আরও চারজন, তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মরিশদা থানার অন্তর্গত ইরিনচি সেতুর কাছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে ট্রেনে তমলুক স্টেশনে পৌঁছন শেখ মোতি ও তাঁর পরিবার। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরার জন্য কাঁথির চালতি থেকে একটি অটো বুক করেছিলেন তাঁরা। অটোটি যখন স্পিড ব্রেক পার করছিল, ঠিক তখনই পিছন থেকে একটি দ্রুতগতির ট্রাক ধাক্কা মারে। ধাক্কার জেরে অটোটি ছিটকে পড়ে সামনের দিক থেকে আসা আর একটি ট্রাকের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। মুহূর্তে দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়িটি, আটকে পড়েন যাত্রীরা।
ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অটোচালক শেখ জাহাঙ্গির আলি (৩২) এবং চার যাত্রী—শেখ মোতি (৪৬), তাঁর মেয়ে মুনমুন খাতুন (১৯), ফাসানা বিবি (২৯) এবং হুমেরা বিবি (৩৫)। তাঁরা সকলেই পূর্ব মেদিনীপুরের চালতি গ্রামের বাসিন্দা।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছায় মরিশদা থানার পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক দু’জনকে স্থানান্তরিত করা হয় তমলুকের তম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে। নিহতদের দেহ পাঠানো হয়েছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় অটোতে চালকসহ মোট ১২ জন যাত্রী ছিলেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
একসঙ্গে চারজন পরিজনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চালতি গ্রামে। আত্মীয়, প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন মোতির বাড়িতে। কেউ কাঁদছেন, কেউ স্তব্ধ হয়ে বসে রয়েছেন। গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “ওঁরা বহু দিন পরে বাড়ি ফিরছিলেন। কে জানত এমন পরিণতি অপেক্ষা করছে!”