কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব সংবাদদাতা : চন্দ্রকোণা, পশ্চিম মেদিনীপুর
দরজায় কড়া নাড়ছে একদল যুবক-যুবতী। পরিচয়, ‘আমরা সরকার অনুমোদিত সমীক্ষা দল।’
কিন্তু কিছুতেই মেলে না পরিচয়পত্রের সত্যতা। প্রশ্ন উঠতে না উঠতেই বেরিয়ে আসে প্রতারণার চাঞ্চল্যকর চক্র। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায় গ্রাম থেকে গ্রামে ঘুরে সমীক্ষার ছুতোয় সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছিল একটি ভুয়ো টিম। পুলিশি তৎপরতায় এবার সেই চক্রের পর্দাফাঁস। গ্রেপ্তার হল দুই মহিলা-সহ মোট ৯ জন।
চন্দ্রকোণা থানায় প্রথম অভিযোগ আসে মঙ্গলবার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন ধরেই একটি ‘টিম’ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম, ঠিকানা, আধার নম্বর এমনকি পারিবারিক তথ্য নিচ্ছে। সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেন কেউ কেউ।
বুধবার ভোরেই তৎপর হয় চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ। এলাকা ভাগ করে বসানো হয় একাধিক ফাঁদ। সকাল দশটার মধ্যে তিনজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। পরে তাঁদের জেরা করে আরও ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক ভুয়ো আই-কার্ড ব্যবহার করছিল।
পুলিশের হেফাজতে ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে—
-
একটি মারুতি ইকো গাড়ি
-
৯টি মোবাইল ফোন
-
একাধিক নকল আইডেন্টিটি কার্ড
এই চক্রটি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় ‘সার্ভে’ করতে এসেছিল বলে পুলিশের অনুমান।
ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
প্রতারণা
-
মিথ্যে পরিচয় প্রদান
-
গোপন নথি সংগ্রহের চেষ্টা
ঘটনার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায় কারণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি প্রশাসন ও দলীয় স্তরে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন—”ভুয়ো সমীক্ষকের নামে ছদ্মবেশে চক্রান্ত হতে পারে, সাবধান থাকুন।” সেই সতর্কতার পরই ঝাড়গ্রাম এবং এবার চন্দ্রকোণার পুলিশের সাফল্য নতুন করে নজরে আনছে গোটা পরিস্থিতিকে।
ঘাটাল মহকুমা আদালতে ধৃতদের তোলা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, “জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এই চক্রের পিছনে আরও বড় কোনও সংগঠন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”