spot_img
36.6 C
Kolkata
Saturday, June 14, 2025
spot_img

একই নামে দু’জন, জেলের গাফিলতিতে ধর্ষণের সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ছাড়া, ফরিদাবাদ জেলের সুপারের চেয়ারে বাজ পড়ল !

কলকাতা টাইমস নিউজ  : বিশেষ সংবাদদাতা : ফরিদাবাদ :

নাম , বাবার নাম— সবই মিলে যাচ্ছে। কিন্তু অপরাধের ধরন আলাদা, সাজার মেয়াদও এক নয়। তবু বিভ্রান্তির সুযোগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গেল ধর্ষণের সাজাপ্রাপ্ত বন্দি! যার দায়ে কার্যত বিদ্যুৎপাতে ঝলসে উঠল ফরিদাবাদ জেলের প্রশাসনিক মাথা— জেল সুপারের চেয়ার।

ঘটনা শুনেই যেন শিউরে উঠছে প্রশাসন। ফরিদাবাদ জেলা সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন দু’জন নীতেশ। এক জন বিহারের পাটনার কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা— বয়স ২৭, নাম নীতেশ পান্ডে। ২০২১ সালে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে ছিলেন তিনি। তার মুক্তির সময় এখনও আসেনি।

অন্যদিকে দ্বিতীয় নীতেশ, বয়স ২৪, বাড়ি ফরিদাবাদের শাস্ত্রী কলোনিতে। সম্প্রতি অনুপ্রবেশের এক মামলায় গ্রেফতার হন এবং আদালতের নির্দেশে জামিন পান। গত মঙ্গলবার ফরিদাবাদ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে তাঁর জামিনের কাগজ জেলে পৌঁছতেই ঘটে সেই ‘ভয়ানক ভুল’।

জেল কর্মীরা খতিয়ে না-দেখেই ছাড়িয়ে দেন ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত নীতেশ পান্ডেকে। ফলত, যে বন্দির সাজা এখনও শেষ হয়নি, সে বেমালুম জেল ছেড়ে চম্পট দিয়েছে!

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু নাম নয়, দু’জনের বাবার নামও রবীন্দ্র। আর তাতেই তৈরি হয় বিভ্রান্তি। জেলের রেকর্ডে কোনও একটিতে পদবি উহ্য থাকায় চূড়ান্ত গাফিলতির জন্ম দেয়।
ফরিদাবাদ পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, “নীতেশের জামিন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছেড়ে দেওয়া হয় ভুল নীতেশকে— ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে। সে এখন পলাতক। বিহারে তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

এদিকে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশোধনাগারের একাংশের সঙ্গে পলাতক নীতেশের ‘যোগসাজশ’ ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য, “এত বড় গাফিলতি শুধু ভুলে সম্ভব নয়। কেউ না কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই ফাঁকটা কাজে লাগিয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।”

ঘটনার জেরে ফরিদাবাদ জেল সুপারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেল কর্মীদেরও তলব করা হয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, একটি এত স্পর্শকাতর মামলার বন্দির পরিচয় যাচাই না করে কেবল নাম দেখে কীভাবে ছাড়া হয়ে যেতে পারে কেউ? শুধুই কি প্রশাসনিক গাফিলতি, না কি এর আড়ালে রয়েছে আরও বড় কোনও দুর্নীতি?

বিহারের পাটনা, দিল্লি ও ফরিদাবাদে চলছে নজরদারি। তবে এতক্ষণে যিনি নিখোঁজ, তিনি ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এক অপরাধী— যিনি এখন আর শুধু সাজাপ্রাপ্ত নন, পালাতকও বটে!

আইন ও শৃঙ্খলার ঘোরতর প্রশ্ন তুলে দিল এই ঘটনাই। এক বানান, এক বাবার নাম— আর তার ছত্রছায়ায় আইনের গোটা ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‘নীতেশ পান্ডে’ এখন নিখোঁজ। ভারতের জেল প্রশাসনের গায়ে ফের উঠল অস্বস্তির দাগ।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,400SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks