কলকাতা টাইমস নিউজ :
দেবজিৎ গাঙ্গুলী :
আরজি কর মেডিকেল কলেজ আন্দোলনের পর মেঘ কাটেনি। এবার বদলি-নির্দেশে প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টে পা বাড়ালেন আন্দোলনের অন্যতম দুই মুখ—ডা. দেবাশিস হালদার এবং ডা. আশফাকুল্লা নাইয়ার।
শুক্রবার হাইকোর্টে জমা পড়ে তাঁদের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে একটি রিট মামলা। মামলায় দাবি, কাউন্সেলিংয়ে যেখানকার পোস্টিং নির্দিষ্ট হয়েছিল, সেই স্থানেই তাঁদের নিযুক্তি হওয়া উচিত। হঠাৎ করে অন্যত্র বদলির সিদ্ধান্তে তাঁরা যেমন হতবাক, তেমনই ক্ষুব্ধ।
চিকিৎসক আশফাকুল্লার পোস্টিং হওয়ার কথা ছিল আরামবাগে। দেবাশিসের হাওড়া জেলা হাসপাতালে। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় দেখা যায়, আশফাকুল্লা বদলি হয়েছেন পুরুলিয়া মেডিকেল কলেজে, আর দেবাশিসকে পাঠানো হয়েছে মালদার গাজোলে।
এই রদবদলের নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে বলেই দাবি ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের।
আদালতে মামলাকারীদের তরফের আইনজীবী জানান— এই দুই চিকিৎসক ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’ পদে রয়েছেন। যদিও তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরের আওতায় কাজ করছেন, তবুও তাঁদের সঙ্গে সরকারিভাবে চুক্তিভিত্তিক নিযুক্তি রয়েছে। সেই অর্থে তাঁরা স্থায়ী সরকারি কর্মী নন। ফলে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (SAT)-এর এখতিয়ার নেই এই বিষয়ে শুনানি করার। তাই তাঁরা সঠিক ফোরাম ধরে হাইকোর্টে এসেছেন।
এই বদলির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন অন্যান্য জুনিয়র চিকিৎসকরাও। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে হয়েছিল বিক্ষোভ। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সেই সময় স্পষ্ট জানিয়ে দেন— অভিযোগ লিখিতভাবে জানাতে হবে। সেই পরামর্শ মেনেই এবার সরাসরি আইনি লড়াই শুরু করলেন দুই চিকিৎসক।
মেডিকেল কাউন্সেলিংয়ের ভিত্তিতে রাজ্যে চিকিৎসকদের পোস্টিং ব্যবস্থা চালু হলেও এই ধরনের একতরফা রদবদলে প্রশ্ন উঠছে গোটা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়েই।
চিকিৎসকদের একাংশ বলছে—এটা নিছকই ‘পেশাগত প্রতিহিংসা’। আন্দোলনে সরব হওয়াতেই বদলির খাঁড়া!
এই দুই চিকিৎসকের দায়ের করা মামলার শুনানিতে কী রায় দেন কলকাতা হাইকোর্ট, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে চিকিৎসক সমাজ। মামলার ভবিষ্যৎ শুধু দু’জনের পোস্টিং নয়, বরং রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিসেবার মধ্যে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা বজায় থাকছে কি না, সেই প্রশ্নও জড়িয়ে থাকবে রায়ে।