কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব সংবাদদাতা :
চার দশক পর, ফের এক ভারতীয়র মহাকাশযাত্রার কাউন্টডাউন শুরু। ৮ জুন সন্ধ্যাবেলা, ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যখন স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন-৯ রকেট আকাশে উঠবে, ভারতের শুভাংশু শুক্লা তার সঙ্গী হবেন — সময়ের, বিজ্ঞানের ও দেশের।
১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মার পর এই প্রথম কোনও ভারতীয় ফের আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। এই মিশন শুধু এক জন মানুষকে মহাকাশে পাঠানো নয়, বরং ১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার এক ঐতিহাসিক উৎক্ষেপণ।
বন্ধুবান্ধবেরা তাঁকে ডাকেন ‘শুকস’। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর জেদ—তিনটিই একসঙ্গে মিশেছে এই নামের মধ্যে। ইসরোর তরফে নির্বাচিত এই বিজ্ঞানী মহাকাশ গবেষণায় ভারতের হয়ে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছেন। নাসা ও অ্যাক্সিয়ম স্পেসের এই যৌথ মিশনে তিনি থাকবেন বিশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণার দায়িত্বে।
“আমি একা যাচ্ছি না। আমার সঙ্গে যাচ্ছে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর বিশ্বাস,”—জানুয়ারিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই মন্তব্য করেছিলেন শুকস।
মিশনের কাঠামো: ইতিহাসের পাতায় নতুন অধ্যায়
-
📅 লঞ্চ ডেট: ৮ জুন (সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটের মধ্যে যাত্রা সম্ভাব্য)
-
🚀 রকেট: SpaceX Falcon-9
-
🧑🚀 ক্রু:
-
শুভাংশু শুক্লা (ভারত)
-
স্লায়োজ উজ়নানস্কি (পোল্যান্ড)
-
টাইবর কাপু (হাঙ্গেরি)
-
পেগি হুইটসন (যুক্তরাষ্ট্র, কম্যান্ডার)
-
এই প্রথম পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির কোনও অ্যাস্ট্রোনট মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক ফান্ডিং, বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য ও কূটনৈতিক তাৎপর্য—সব মিলিয়ে মিশন ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ নজিরবিহীন।
🔬 কী করবেন শুভাংশু স্পেস স্টেশনে?
-
১৪ দিনের মধ্যে ৬০টি বৈজ্ঞানিক গবেষণা
-
৩১টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কর্মসূচি
-
ইসরো ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের সঙ্গে খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক পরীক্ষা
-
মেথি ও মুগের মতো ভারতীয় খাদ্য মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে উৎপাদনযোগ্য কিনা তা নিয়ে গবেষণা
-
৭টি এক্সপেরিমেন্ট + নাসা–র সঙ্গে যৌথ ৫টি গবেষণায় অংশগ্রহণ
মিশনের হাইলাইটস
বিষয় | তথ্য |
---|---|
লঞ্চ ডেট | ৮ জুন, সন্ধ্যা ৬:৪১ এর মধ্যে |
রকেট | SpaceX Falcon-9 |
সংস্থা | Axiom Space, সহযোগী: NASA, ISRO |
ভারতীয় প্রতিনিধি | শুভাংশু শুক্লা |
গবেষণা | ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা + খাদ্য গবেষণা |
খরচ | ₹৫৫০ কোটি (ISRO) |
শুধু গবেষণাই নয়, মহাকাশের জীবনধারাও তুলে ধরবেন দেশবাসীর সামনে। ভিডিও, ছবি, এমনকি রান্নার মুহূর্তও ভাগ করে নেবেন।
এই মিশনকে ভারতের ভবিষ্যৎ গগনযান অভিযানের প্রস্তুতিপর্ব বলেই ধরা হচ্ছে। ২০২৭ সালের সেই ঐতিহাসিক মিশনে শুকসের অভিজ্ঞতা কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। ইসরো এই অভিযানে খরচ করছে প্রায় ₹৫৫০ কোটি টাকা—ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার জন্য এক বড় লগ্নি।
৮ জুনের সন্ধ্যা শুধু একজন অ্যাস্ট্রোনটের উড়ান নয়, বরং এক জাতির আত্মবিশ্বাসের জোয়ার। শুভাংশু শুক্লা একা রকেটে উঠবেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকবে একটা জাতি, যার চোখে স্বপ্ন—এখন আরও দূরের তারা ছোঁয়ার।