কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
শিক্ষা ক্ষেত্রে পুনরায় নিয়োগ শুরু করতে চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু নিয়োগ শুরুর আগেই তীব্র আইনি বাধার মুখে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় হাইকোর্টে মামলা দায়ের। আর সেই মামলাতেই রাজ্য সরকারের নয়া নিয়োগ বিধি ও এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।
একদিনে তিন মামলা, রাজ্য প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়াল SSC ইস্যু
মঙ্গলবার একদিনেই স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে।
• প্রথম মামলা, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য রাজ্যের ঘোষিত মাসিক ভাতা নিয়ে।
• দ্বিতীয়, ‘টেন্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত প্রার্থীদের বেতন ফেরতের নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে।
• তৃতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলা, ২০২৫-এর নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে।
‘অবৈধ’ নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি? প্রাসঙ্গিক উঠল ২০১৬-র প্রসঙ্গ
গত ৩০ মে এসএসসি যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি—
“যেহেতু ২০১৬-র প্যানেল বাতিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, তাই নতুন নিয়োগও সেই নিয়োগপত্র অনুযায়ীই করতে হবে। আর পরীক্ষাও শুধু ২০১৬-র চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে থেকেই নিতে হবে।”
চাকরির নম্বর বিভাজনেই ফাঁক, দাবি মামলাকারীর
নতুন বিধিতে শিক্ষকতা অভিজ্ঞতা বাবদ বরাদ্দ হয়েছে ১০ নম্বর। মামলাকারীদের যুক্তি—
“যাঁরা আগে চাকরি পাননি বা ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন, তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা নেই। ফলে তাঁরা ১০ নম্বরেই বঞ্চিত হবেন।”
ফলে এক প্রার্থী ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়িত হবেন, আরেকজন ৯০ নম্বরের।
“এটা স্পষ্ট বৈষম্য,” দাবি মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের।
লেকচার ডেমো নিয়ে পক্ষপাতিত্বের আশঙ্কা
নতুন নিয়মে ইন্টারভিউয়ের পাশাপাশি ‘লেকচার ডেমো’ বাবদ আরও ১০ নম্বর যুক্ত হয়েছে। কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন—
“পারফরম্যান্স বিচার হবে সম্পূর্ণ পরীক্ষকের মানসিকতার উপর নির্ভর করে। ফলে পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।”
২০১৬-র দুর্নীতির ছায়া থেকে শিক্ষা নিয়েও কি শিক্ষা দপ্তর বেরোতে পারছে না?
যদিও মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের গ্রীষ্মকালীন বেঞ্চে বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় মামলার অনুমতি দিয়েছেন।৫ জুন বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
তবে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা— এই মামলার রেশ ধরে কি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার স্থগিত হতে চলেছে?
নতুন নিয়োগে ‘নতুন নিয়ম’ আনার চেষ্টা হলেও, পুরনো ভুলের ছায়া যেন পিছু ছাড়ছে না রাজ্যের।
যাঁরা বঞ্চিত, তাঁদের সুবিচার নিয়ে যতই চেষ্টা হোক, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা উপেক্ষা করে পথ চললে তা আরও জটিলতা ডেকে আনবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।