কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
বিদেশমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দেওয়া সম্ভব নয়— কিন্তু কূটনৈতিক সফর নিয়ে নিজের অবস্থান জানাতে ব্যর্থ হচ্ছেন না তিনি। পাঁচ দেশ সফর করে সদ্য ফিরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে তিনি থাকছেন না। তবে নিজের মত স্পষ্টভাবে লিখিতভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রককে।
কলকাতায় ফেরার পর মঙ্গলবার রাতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন,
“গত ১৫ দিন ধরে দেশের বাইরে ছিলাম। কয়েকটি পূর্ব নির্ধারিত জরুরি কাজ রয়েছে। উপরন্তু রাজ্যে বিধানসভার উপনির্বাচনও ঘোষণা হয়ে গেছে। ফলে কয়েকদিন আমার পক্ষে অন্য কোথাও থাকা সম্ভব নয়। তবে আমি আমার মতামত বিদেশ মন্ত্রককে লিখিতভাবে জানিয়ে দেব।”
সম্প্রতি কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে গঠিত হয় সংসদের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের পর এই সফরের মাধ্যমে পাঁচটি দেশে ভারতের অবস্থান তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সফর করেছেন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায়।
সফরকালীন মালয়েশিয়ায় অভিষেক স্পষ্ট জানান,
“পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও আলোচনার প্রশ্নই নেই। আলোচনা হবে দেশের স্বার্থে, শর্তসাপেক্ষে। দলের আগে দেশ।”
তাঁর এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
সূত্র বলছে, আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সর্বদলীয় ওই প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা। তারই প্রস্তুতি হিসেবে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর প্রথমে সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু ঠিক সেই সময়েই অভিষেক ব্যস্ত থাকবেন দলীয় কাজে। ফলে সরাসরি হাজির না থাকলেও, দেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সফরের অভিজ্ঞতা ও মতামত বিদেশ মন্ত্রককে জানাতে উদ্যোগী তিনি।
এই অনুপস্থিতি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নানা জল্পনা থাকলেও, রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব দেশের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নিজেদের ভূমিকা নির্লিপ্ত নয়— সেই বার্তাই আরও একবার স্পষ্ট করলেন অভিষেক।
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মতপ্রকাশের মাধ্যম বদলালেও, জাতীয় স্বার্থে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে প্রস্তুত সাংসদ অভিষেক। শারীরিক অনুপস্থিতি যেন তাই মতের অনুপস্থিতিতে পর্যবসিত না হয়— সেটাই যেন এই ঘটনার মূল সুর।