কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব সংবাদদাতা : বেঙ্গালুরু
বিজয় উৎসবের উত্তাপে যখন উল্লাসে ফুটছিল বেঙ্গালুরু, তখনই চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে ঘটল বিভীষিকা। প্রাণ হারালেন ১১ জন, আহত বহু। উৎসব পালটে গেল শোকসভায়। আর সেই ঘটনার দায় এখন এসে পড়ছে আয়োজক সংস্থা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার শীর্ষ কর্তাদের ঘাড়ে।
মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরু পুলিশ গ্রেফতার করেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপণন প্রধান নিখিল সোসালেকে। জানা গেছে, মুম্বই পালানোর চেষ্টায় ছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে আটক করা হয়। পাশাপাশি আটক করা হয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা DNA এন্টারটেইনমেন্ট নেটওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড–এর তিন কর্তা ব্যক্তিকেও।
এই ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআরে শুধু RCB বা DNA-ই নয়, নাম জড়িয়েছে কার্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (KSCA)-রও। তদন্তে এখন তিন সংস্থার ভূমিকা ঘিরে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
প্রশাসনিক কাঁপুনি: সাসপেন্ড বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সহ শীর্ষ আধিকারিকরা
মঙ্গলবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া রাজ্য প্রশাসনকে কড়া বার্তা দেন। প্রাথমিক তদন্তে ‘গাফিলতির প্রমাণ’ থাকার ভিত্তিতে সাসপেন্ড করা হয় বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার বি দয়নন্দ, অ্যাডিশনাল কমিশনার (ওয়েস্ট) বিকাশ কুমার বিকাশ, ও ডিসিপি (সেন্ট্রাল) শেখর এইচ তেক্কান্নভার-কে।
সিদ্দারামাইয়া বলেন, “সাধারণ মানুষ নিরাপদে থাকবেন না, সেটা হতে পারে না। যে দায় নিয়েছে আয়োজন করতে, সে দায় নিয়ে কেন এমন মারাত্মক গাফিলতি?”
ঘটনার গুরুত্ব মাথায় রেখে গঠিত হয়েছে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন, যার নেতৃত্বে থাকছেন কর্নাটক হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহা। পাশাপাশি, CID পৃথকভাবে তদন্ত করবে RCB, KSCA এবং DNA-র ভূমিকা নিয়ে।
৪ জুনের সেই সন্ধ্যায় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে জমায়েত হয়েছিল প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। আইপিএলে প্রথমবারের মতো ট্রফি জেতা RCB-র খেলোয়াড়দের এক ঝলক দেখার বাসনায় হাজির হয়েছিল জনসমুদ্র। কিন্তু যে কোনও ভিড় নয়—নিয়ন্ত্রণহীন, পরিকল্পনাহীন এক চাপা দৌড়াদৌড়ি। যার পরিণতিতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১১ জনের। আহত আরও বহু।
এত বড় একটি সমাবেশে কীভাবে এমন শোচনীয় পরিকল্পনার অভাব দেখা গেল? কেন পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি? কেন জরুরি বাহিনীর প্রবেশপথ রাখার ব্যবস্থাও ছিল না? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারী দল।