কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব প্রতিনিধি :
মাত্র চার বছর বয়স শেখ সাবিরের। কথার জগৎ তার কাছে ছিল নীরব, নিঃসঙ্গ। জন্মগত শ্রবণ প্রতিবন্ধকতায় মোড়া জীবন হঠাৎই পেল আশার আলো। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এবার নিখরচায় কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হতে চলেছে শেখ সাবিরের। অস্ত্রোপচার হবে আগামী জুলাই মাসে।
বজবজের বাসিন্দা শেখ সাবিরের পরিবারের কাছে চিকিৎসার বিপুল খরচ ছিল একপ্রকার স্বপ্নের বাইরে। কারণ, সাধারণভাবে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টে খরচ হয় প্রায় ৬ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। শুধু যন্ত্রটিরই বাজারমূল্য ৫–৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেবাশ্রয় শিবিরের মাধ্যমে শিশুটির কথা জানতে পেরে দ্রুত উদ্যোগ নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অস্ত্রোপচারের জন্য গঠিত হয়েছে ৯ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম। দলে রয়েছেন ইএনটি সার্জন, পেডিয়াট্রিক ইএনটি বিশেষজ্ঞ, শিশু চিকিৎসক, স্পিচ থেরাপিস্ট প্রমুখ। অস্ত্রোপচারের আগে প্রয়োজনীয় সমস্ত মেডিক্যাল পরীক্ষা, এমনকি অ্যানেস্থেটিক রিভিউ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরে যাতে সাবির মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে এবং সঠিক পুনর্বাসন পায়, সেই কারণে তার পরিবারকেও কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।
ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় গত কয়েক মাসে দু’দফায় ‘সেবাশ্রয়’ স্বাস্থ্য শিবির হয়েছিল। সেখানে বহু শিশুর শ্রবণ সমস্যা ধরা পড়ে। অনেকে রেফার হন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ভিন রাজ্যে। শেখ সাবির তেমনই এক শিশু, যাকে শিবির শেষ হওয়ার পরেও ‘ভুলে যাননি’ অভিষেক।
রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে,
“সেবাশ্রয়ের মাধ্যমে ডায়মন্ড হারবারে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দায়বদ্ধ।”
চিকিৎসকদের মতে, জন্মগত শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সময়ের আগেই কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট করানো প্রয়োজন। অল্প বয়সে ইমপ্ল্যান্ট হলে শিশুর শ্রবণশক্তি ও বাকশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
শেখ সাবির এখন অপেক্ষায় জুলাইয়ের। আর তার মা-বাবার চোখে ভরসা—কিছুদিন পর হয়তো তারা নিজের সন্তানের মুখে শুনতে পারবেন সেই কাঙ্ক্ষিত ডাক, “মা।”
‘সেবাশ্রয়’ হয়তো একটা প্রকল্প। কিন্তু শেখ সাবিরের জন্য তা একটা নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ। যেখানে সুর, শব্দ, কথা—সবকিছুই এখন আবার কাছে আসতে চলেছে। আর এই যাত্রার নেপথ্যে আছেন এক সাংসদ, যিনি বলেন,
“স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প একবার শেষ হলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। মানুষ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”