কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ছায়া ক্রমেই ঘনীভূত। ইরান ও ইজ়রায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই দুই দেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবার আরও একবার সক্রিয় হল ভারত সরকার। ইরানের পরে এবার ইজ়রায়েল থেকেও নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে শুরু হয়েছে বিশেষ উদ্ধার অভিযান—নাম ‘অপারেশন সিন্ধু’।
এই অভিযানের প্রথম পর্যায়ে, বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় একটি বিশেষ বিমানে ১১০ জন ভারতীয় পড়ুয়া নয়াদিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, বেশিরভাগই ইজ়রায়েলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনারত ছিলেন। যুদ্ধের আবহে উদ্বিগ্ন পরিবারগুলির দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটল তাঁদের দেশে ফেরা দিয়ে।
পরিকল্পনা অনুসারে, ইজ়রায়েলের সঙ্গে থাকা স্থলসীমান্ত ব্যবহার করেই ভারতীয়দের নিরাপদ জায়গায় আনা হচ্ছে। সেখান থেকে বিশেষ চার্টার্ড বিমানে তাঁদের দেশে ফেরানো হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়াটি তেল আভিভে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সরাসরি তত্ত্বাবধানে চলছে।
যে সব ভারতীয় নাগরিক ইজ়রায়েল ছেড়ে ভারতে ফিরতে ইচ্ছুক, তাঁদের তেল আভিভ দূতাবাসে নাম নথিভুক্ত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। দূতাবাসের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, যুদ্ধের সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে এবং সময়মতো পদক্ষেপ নিতে আগাম তালিকা তৈরি করাই এই নিবন্ধনের মূল উদ্দেশ্য।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ চলাকালীন, ভারত সরকার ‘অপারেশন অজয়’ চালিয়ে ইজ়রায়েল থেকে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিল। ওই সময়ও বহু ছাত্রছাত্রী ও কর্মী বিশেষ বিমানে দিল্লি ও মুম্বইয়ে ফিরেছিলেন। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার ‘অপারেশন সিন্ধু’।
বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন,
“যেখানেই হোক না কেন, প্রত্যেক ভারতীয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। এই ধরনের উদ্ধার অভিযান শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, এটি ভারতের প্রতিশ্রুতি—আমরা আমাদের নাগরিকদের পাশে আছি।”
ইরান-ইজ়রায়েলের এই সংঘর্ষ যদি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়, তাহলে গোটা পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ব্যাপক মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। ভারত সরকারের এই আগাম উদ্যোগ শুধু নাগরিক সুরক্ষার বার্তা নয়, বরং বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় এক দ্রুত কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রস্তুতির প্রমাণও।
যুদ্ধের অন্ধকারে যখন ঘরছাড়া হওয়ার আশঙ্কা ঘনিয়ে আসে, তখন রাষ্ট্রের ভূমিকা শুধু প্রশাসনিক নয়—এটা হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাস ও ভরসার প্রতীক। ‘অপারেশন সিন্ধু’ তারই প্রতিচ্ছবি।




