কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব প্রতিনিধি :
মুম্বই, ২৩ জুন:
মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক পদযাত্রা ‘वारी’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে রাজনৈতিক ঝড় তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমি। সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে এবার সরব হল মহারাষ্ট্রের মহাযুতি জোটের অন্যতম শরিক দল, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এনসিপি-র মুখ্য মুখপাত্র আনন্দ পরাঞ্জপে বলেন, “আবু আজমি মহারাষ্ট্রে এক বিষে পরিণত হয়েছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে এমন মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করছে। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।”
কী বলেছিলেন আবু আজমি?
সম্প্রতি এক জনসভায় আবু আজমি বলেন, “মুসলমানরা কখনওই ‘वारी’ নিয়ে আপত্তি করেনি, কিন্তু আমাদের নেতারা যদি ঈদের সময় রাস্তায় নামাজ পড়া নিয়ে কিছু বলেন, যেমন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ করেছিলেন, তাহলে সমস্যা তৈরি হয়।”
এই মন্তব্য ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেই ক্ষোভের ঝড় ওঠে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস বলেন, “আবু আজমির মন্তব্য নিছকই এক ধরনের চমকপ্রদ প্রচার কৌশল। তিনি জনমোহন সৃষ্টির লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে চাইছেন।”
বিজেপি নেতা ও রাজ্যের বন্দর বিষয়ক মন্ত্রী নীতেশ রানে কড়া ভাষায় আজমিকে আক্রমণ করে বলেন, “এরা মহাকুম্ভ হোক বা ‘वारी’—সবকিছুতেই আক্রমণ করে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানগুলি সারাবছর চলে না। তাহলে কি হজ যাত্রা নিয়েও প্রশ্ন তোলা শুরু করব আমরা?”
‘वारी’-র ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির বার্তা
এনসিপি-র পরাঞ্জপে আরও বলেন, “আষাঢ়ি ‘वारी’ কেবল ধর্মীয় আচার নয়, এটি একটি ৮০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য, যা ভক্তি, একতা এবং সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক। বহু মুসলমানও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এই যাত্রায় অংশ নিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দেন।”
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মহারাষ্ট্রের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ ‘ওয়ারকরি’ পদব্রজে পুণ্যনগরী পাণ্ডারপুরে পৌঁছান। তাঁরা কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যান সন্ত জ্ঞানেশ্বর ও সন্ত তুকারামের ‘পালখি’। এই যাত্রা শুধু ভক্তির নয়, বরং এটি ধর্মীয় সহাবস্থানেরও এক মহান নিদর্শন।
কী পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার?
যদিও সরকারি মহল থেকে এখনও পর্যন্ত আবু আজমির বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা হয়নি, তবে চাপ বাড়ছে জোটসঙ্গী এনসিপি ও বিজেপি নেতাদের তরফে। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে, এই ইস্যুতে ভবিষ্যতে আজমির রাজনৈতিক অবস্থান আরও বিপাকে পড়তে পারে।




