কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
“আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে কোনওরকম আপস চলবে না। সঠিক প্রোটেকশন গিয়ার ছাড়া ফোর্স মাঠে নামবে না—এটাই আমার স্পষ্ট নির্দেশ,”—সোমবার ‘ক্রাইম কনফারেন্স’-এ এই ভাষাতেই কড়া বার্তা দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
সম্প্রতি মহেশতলায় রাজনৈতিক অশান্তির সময় কলকাতা পুলিশের ডিসি হরিকৃষ্ণ পাঁই ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হন। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেই কমিশনার বলেন,
“একজন ডিসি যখন নিজেই মাথায় আঘাত পান, তখন বুঝতে হবে মাঠে নামার সময় কী ভুল হচ্ছে। উনি স্পোর্টস হেলমেট পরেছিলেন, যেটা কোনওভাবেই এই ধরনের সংঘর্ষে পর্যাপ্ত নয়। ভবিষ্যতে এমন ভুল বরদাস্ত করা হবে না।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা আমাদের বাহিনীকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারি না। এই জন্যই ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ অনুসরণ করতে হবে। প্রতিটি বাহিনী সদস্যকে নির্ধারিত সবুজ বর্মযুক্ত হেলমেট, ঢাল এবং শরীর রক্ষার সমস্ত গিয়ার পরে নামতে হবে।”
লালবাজার সূত্রে খবর, ডিসির আঘাত পাওয়ার ঘটনায় কমিশনার রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন। এর আগে এসএসসি আন্দোলন, আরজি কর হাসপাতালে উত্তেজনা কিংবা বজবজে গোলমালের সময়ও পুলিশদের আহত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু কর্তাদের উদাসীনতায় কিছু ক্ষেত্রে সঠিক গিয়ার ব্যবহার হয়নি বলেই দাবি অভ্যন্তরীণ সূত্রে।
কমিশনারের বক্তব্য অনুযায়ী,
“এখনকার পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়বে—এটা ধরেই নিতে হবে। তাই বাহিনীকে এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। শুধু সাহস থাকলেই চলবে না, বুদ্ধিও থাকতে হবে।”
তিনি থানাগুলিকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যেকটি বাহিনীকে গোলমালের আশঙ্কা থাকলে প্রোটেকশন গিয়ার সম্পূর্ণভাবে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে।
“এই নির্দেশ অমান্য করলে ভবিষ্যতে ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে—সবাইকে আমি জানিয়ে দিলাম,” বলেন মনোজ ভার্মা।
এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“কমিশনার স্যারের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট সময়োপযোগী। ইতিমধ্যেই আমরা থানা ও ব্যাটেলিয়ন ইউনিটগুলিকে মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছি। ফোর্সের সুরক্ষাই এখন অগ্রাধিকার।”
সেই সঙ্গে বিভিন্ন থানায় নিয়মিত চেকিংও শুরু হয়েছে বলে খবর। গোলমালের আশঙ্কা থাকলেই বাহিনীর হাতে থাকবে ঢাল, মাথায় হেলমেট, বুকে বর্ম—এভাবেই এখন তৈরি হচ্ছে কলকাতা পুলিশ।




