কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
ওড়িশার পুরী জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রার প্রাক্কালে ঘটল নজিরবিহীন এক ঘটনা। ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার জন্য তৈরি বিশেষ ঔষধি ভোগ মন্দির চত্বরের সুরক্ষিত ঘর থেকেই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শ্রীক্ষেত্রে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্বস্তিতে মন্দির কর্তৃপক্ষ, ক্ষোভে ফুঁসছে সেবায়েত সমাজ।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বেশ কিছু দিন বিশ্রামে থাকেন। এই সময় তাঁদের সুস্থতার জন্য ‘ঔষধি নৈবেদ্য’ নিবেদন করা হয়। এই ভোগ প্রস্তুত করেন মন্দিরের রাজবৈদ্য। এবছর তৈরি হয়েছিল মোট ৩১৩টি ‘আমুনিয়া মোদক’— যা আয়ুর্বেদীয় গুণসম্পন্ন একটি ভোগ।
একাদশীর রাতে এই মোদক উৎসর্গের ঠিক আগে দেখা যায় ৭০টি মোদক নেই। এই ঘটনা সামনে আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মন্দির প্রাঙ্গণে। বলভদ্রের সেবায়েত হলধর দাসমহাপাত্র জানিয়েছেন, “মন্দিরের সুরক্ষিত ঘর থেকেই উধাও হয়ে যায় ওই ৭০টি মোদক। উৎসর্গ করার আগে গোনাতেই গরমিল ধরা পড়ে।”
হলধর দাসমহাপাত্র এই ঘটনা নিয়ে শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (SJTA) কাছে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন— সুরক্ষিত ঘর, যেখানে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট জনের প্রবেশাধিকার, সেখান থেকে কীভাবে উধাও হয়ে গেল এই পবিত্র প্রসাদ?
রাজবৈদ্যের তৈরি ভোগ প্রতিবারই নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মন্দিরে আনা হয় এবং তা রাখা হয় নির্দিষ্ট সুরক্ষিত স্থানে। এবছর রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগেই আঁটসাঁট করা হয়েছিল। কিন্তু তবুও কীভাবে ঘটল এই চুরি, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।
উল্লেখ্য, বছরের শুরুতেই জগন্নাথ মন্দিরে এক অন্যরকম ঘটনা ঘটে— চিল উড়ে নিয়ে যায় মন্দিরের পতাকা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভোগ চুরি, যা নিয়ে শ্রীক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও জনআস্থা হানির আশঙ্কা।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে মন্দিরের ভক্ত, সেবায়েত এবং পর্যটকদের একাংশ এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করছেন। কারও মতে, এর পেছনে চক্রান্ত থাকতে পারে।
রথযাত্রা শুরু হতে আর মাত্র কিছু দিন বাকি। তার আগে এই ধরনের ঘটনা প্রশাসনের জন্য বড়সড় সতর্কবার্তা হিসেবেই ধরা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মন্দিরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও সূত্রের খবর।




