spot_img
22 C
Kolkata
Saturday, November 15, 2025
spot_img

তাবিজ বিক্রেতা থেকে ১০৬ কোটির ‘বাবা’! ধর্মান্তরকরণ চক্রের মাথা ছাঙ্গুর বাবার সাম্রাজ্যের চাঞ্চল্যকর ভেতরের গল্প !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব প্রতিনিধি : 

এক সময় সাইকেলে করে তাবিজ-আংটি বিক্রি করতেন। আজ তাঁর নামে রয়েছে ৪০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, জমা আছে প্রায় ১০৬ কোটি টাকা। যাঁর জীবনের শুরুর পাতা ছিল দারিদ্র্যে মোড়া, তিনি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। নাম— জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবা। উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলার ধর্মান্তরকরণ চক্রের মূল চক্রী বলে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গত শনিবার লখনউয়ের এক বিলাসবহুল হোটেল থেকে ছাঙ্গুর বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সঙ্গে ধরা পড়ে তাঁর সহযোগী নীতু ওরফে নাসরিন। দু’জনের বিরুদ্ধেই ধর্মান্তরকরণের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই তদন্তকারীরা চমকে ওঠেন। উঠে আসে আরব বিশ্বের একাধিক উৎস থেকে আসা বিপুল অর্থ, বেআইনি সম্পত্তি ও সংঘবদ্ধ চক্রের তথ্য।

একসময় রেহরা মাফি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন জামালউদ্দিন। কিন্তু তাঁর উত্থানের পথ যে ছিল কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং ছিল চূড়ান্ত ষড়যন্ত্রে মোড়া—তা বুঝতে সময় নেয়নি প্রশাসন।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা কোটি টাকার অর্থে ছাঙ্গুর বাবার নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়েছে বিপুল অর্থ। তদন্তকারীরা বলছেন, আর্থিক লেনদেনের উৎস প্রায় সবই আরব দেশ।

বলরামপুরের মাধোপুর এলাকায় একটি সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বানানো হয়েছিল এক বিশাল ভবন। বলা হয়েছিল, সেখানে হাসপাতাল হবে। পরের বছর বলা হয় স্কুল তৈরি হবে। কিন্তু বাস্তবে ভবনটি হয়ে ওঠে চক্রের মূল ঘাঁটি।
১৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা আর দু’টি পাহারাদার কুকুরে মোড়া ভবনটিকে অবশেষে ভেঙে দেয় প্রশাসন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ভবনটি শুধু আবাসন নয়—অর্থ স্থানান্তরের এবং গোপন বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবেই ব্যবহৃত হতো।

ছাঙ্গুর বাবা ও নাসরিনের নামে লোনাভালায় একটি জমি কিনে নেওয়া হয়েছিল। জমির দাম ১৬.৪৯ কোটি টাকা। এক মহম্মদ আহমেদ খানের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল জমিটি।
তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, এই আহমেদ খানই কি সেই ব্যক্তি যিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে তহবিল পাঠাচ্ছিলেন?

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই চক্র নিশানা করত—

  • দরিদ্র ও অসহায় শ্রমিক,

  • নিম্নবর্গীয় মানুষ,

  • বিধবা মহিলাদের।

প্রলোভন, আর্থিক সাহায্য, বিয়ের প্রতিশ্রুতি কিংবা ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করা হতো তাঁদের।

এই মুহূর্তে তদন্তে একসঙ্গে কাজ করছে—

  • ATS (Anti-Terror Squad)

  • UP STF (Special Task Force)

  • ED (Enforcement Directorate)

ইডি ইতিমধ্যেই লখনউ ইউনিটে একটি মামলা দায়ের করেছে। কে পাঠিয়েছিল টাকা? কেন পাঠানো হয়েছিল? কোনও জঙ্গি যোগাযোগ আছে কি না—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

যে ব্যক্তি তাবিজ আর আংটি বিক্রি করে জীবিকা শুরু করেছিলেন, তিনিই পরে ধর্মান্তরকরণকে হাতিয়ার করে গড়ে তুললেন এক আন্তর্জাতিক তহবিলচক্র। প্রশাসনের হাত ধরে সেই মুখোশ আজ খসে পড়ছে।
কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এমন কত ছাঙ্গুর বাবা এখনো ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তদন্ত সেখানেই থামছে না, বরং জোরকদমে চলছে পরবর্তী দিক শনাক্ত করার কাজ।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks