কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাজ্যের শিল্পোন্নয়নে নতুন বার্তা? নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে বসলেন টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরন। বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে— টাটা গোষ্ঠী কি তবে আবার বাংলায় বড়সড় লগ্নির দিকে এগোচ্ছে?
নবান্ন সূত্রে খবর, বুধবারের এই বৈঠকে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো একাধিক জেলায় সম্ভাব্য বৃহৎ শিল্প লগ্নির কথা উঠে এসেছে। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই এই বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে।
বৈঠক শেষে তৃণমূল কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে জানানো হয়—
“@MamataOfficial আজ টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান শ্রী এন. চন্দ্রশেখরনকে স্বাগত জানান। বাংলার শিল্পোন্নয়ন ও সম্ভাবনার প্রসারে এই বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির মাধ্যমে উদ্ভাবন, বিনিয়োগ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশই বাংলার অঙ্গীকার।”
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরণের উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ রাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিবেশের বার্তা দেয়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. অমিত মিত্র জানিয়েছেন, বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট (BGBS)-এর পর ইতিমধ্যে ৩১৬৫টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এরই মাঝে উৎসবের পরে রাজ্য সরকার ‘বিজনেস কনক্লেভ’-এর পরিকল্পনাও করছে।
এই প্রেক্ষাপটে টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনাকে ‘সম্ভাব্য ক্লোজিং চুক্তি’র আগাম ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন শিল্প মহলের একাংশ।
টাটা গোষ্ঠী ইতিমধ্যে নিউটাউনে টাটা মেডিকেল সেন্টার-এর ‘মেডিকিটি’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এ দিনকের আলোচনার ফলে অনুমান করা হচ্ছে, রাজ্যে টাটার আরও একাধিক উচ্চমানের প্রকল্প যোগ হতে পারে।
এক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকের ভাষায়, “এই বৈঠক শুধু বিনিয়োগের রূপরেখাই নয়, রাজ্যের তরুণদের কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।”
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, বিরোধীরা বারবারই সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠীর গাড়ি প্রকল্প প্রত্যাহার প্রসঙ্গ তুলে শিল্পক্ষেত্রে সরকারের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এই আবহেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি চন্দ্রশেখরনের সঙ্গে বৈঠক রাজনৈতিক স্তরেও ‘পুনরুদ্ধারের কৌশল’ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
টাটাদের বাংলায় সম্ভাব্য নতুন লগ্নি রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামোকে যেমন মজবুত করতে পারে, তেমনই নতুন কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি সহযোগিতা ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির পথ প্রশস্ত করতে পারে।
তবে প্রশ্ন একটাই— এই গঠনমূলক আলোচনা কতটা বাস্তব রূপ পাবে? এখন নজর সময়ের সাথে সেই দিকেই।




