spot_img
22 C
Kolkata
Saturday, November 15, 2025
spot_img

“ঐতিহ্যের উপর আঘাত”, বাংলাদেশে উপেন্দ্রকিশোরের ভিটে ধ্বংস নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলা – সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব প্রতিনিধি : 

য়মনসিংহে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক ভিটে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত ঘিরে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে দুই বাংলার মধ্যে। একদিকে এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের ‘অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন বিশিষ্টজনেরা, অন্যদিকে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই ঘটনাকে “বাঙালির আবেগ ও বিবেকের উপর আঘাত” বলে উল্লেখ করেছেন।

সত্যজিৎ রায়ের দাদু, সুকুমার রায়ের পিতা, কিংবদন্তি শিশুসাহিত্যিক, বিজ্ঞানমনস্ক শিল্পী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জীবন ও কর্ম বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর পালকপিতা জমিদার হরিকিশোর রায়চৌধুরীর নামে নামাঙ্কিত ‘হরিকিশোর রায় রোডে’ অবস্থিত ময়মনসিংহের শতাব্দী প্রাচীন বাড়িটি, বর্তমানে ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, শিশু অ্যাকাডেমির নতুন ভবন নির্মাণের জন্যই এই সিদ্ধান্ত।

বিষয়টি সামনে আসতেই প্রথমে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন:

“এটি কেবলমাত্র একটি পুরনো বাড়ি নয়, এটি বাঙালির ঐতিহ্য, স্মৃতি, এবং শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের অবদানকে অবজ্ঞা করে এই বাড়ি ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”

তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ঐতিহ্যবাহী ভবনটি সংরক্ষণের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার ও কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, উপেন্দ্রকিশোরের আরেকটি ভিটে— কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামের বাড়িটি সংস্কার করেছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন। তবে ময়মনসিংহের বাড়িটি দীর্ঘদিন অবহেলিত অবস্থায় পড়ে ছিল। অবশেষে সেই বাড়িটি শিশু অ্যাকাডেমির নির্মাণকাজের জন্য ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী প্রশাসন।

শুধু রাজনৈতিক মহল নয়, সাংস্কৃতিক জগৎ, লেখক মহল ও ইতিহাসবেত্তাদের মধ্যেও এই ঘটনার প্রতিবাদ জোরদার হয়েছে। তাঁদের দাবি, “যে জাতি উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার ও সত্যজিৎকে শ্রদ্ধা করে, তাদের পক্ষে এ ধরনের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা রক্ষা করা নৈতিক কর্তব্য।”

উপেন্দ্রকিশোরের উত্তরাধিকার কেবল ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের নয়, গোটা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের। তাই বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ দুই বাংলার সম্পর্কের ক্ষেত্রে আবেগঘন এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদৌ বদলাবে কি না, তা সময় বলবে। তবে উপেন্দ্রকিশোরের স্মৃতিবিজড়িত এই স্থাপনা রক্ষা পাবে কি না, এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছে দুই বাংলার সংস্কৃতিপ্রেমীরা।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks