কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব প্রতিনিধি :
বাংলার মানুষকে যদি বাইরে অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়, তবে তার প্রতিবাদ হবে রাজপথে— সাফ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষা, সংস্কৃতি, পরিচিতি নিয়ে বাঙালিদের ‘অপমান’ করা হলে, তার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি। একইসঙ্গে আগামী কেন্দ্রীয় নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের জয় নিয়ে আশাবাদী মমতা জানিয়ে দিলেন, “২০২৬-এ বাংলাও থাকবে, দিল্লিও আমাদের হবে।”
সম্প্রতি কিছু রাজ্যে বাঙালিদের ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে বিদ্বেষমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠার পরে মুখ্যমন্ত্রী ফের সরব হলেন। মমতা বলেন, “আমি মারব না, কাটব না, ভাষার বিকৃতি করব না। কিন্তু যারা বাঙালিদের হেনস্থা করছে, তারা যদি না থামে— তবে কী করলে থামবে, তা আমরা বুঝে নেব।”
তিনি আরও বলেন, “ওরা আমাদের ভাষা বোঝে না, সংস্কৃতি বোঝে না। কিন্তু বাংলাকে ছোট করার চক্রান্ত করলে, বাংলার মানুষ চুপ করে থাকবে না। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ বা ওড়িশায় আমাদের ভাইবোনেদের গায়ে কেউ হাত দিলে, তার প্রতিবাদ হবে এখান থেকে।”
রাজনৈতিক বার্তাও ছিল স্পষ্ট। মমতা বলেন, “আমরা এখানে সরকারে আছি। ২০২৬-এও থাকব। বিজেপি যতই চক্রান্ত করুক, বাংলায় ওদের জায়গা নেই। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছেন।”
আগামী লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটই সরকার গড়বে বলে মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, “আগামী দিন দিল্লি দখল আমরা করব। এই সরকার (বিজেপি) বিদায়ের দিন গুনছে। জনগণ তাঁদের উত্তর দেবে। নতুন সরকার গড়বে দেশের মানুষ, যারা ধর্ম নয়, উন্নয়নের কথা বলে। মনে রাখবেন, কেন্দ্রে পরের সরকার হবে ইন্ডিয়া টিমের।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাষা নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত। বাংলা ভাষা আমাদের পরিচয়, অহংকার। তাকে কেউ ছোট করতে পারবে না। আমরা যেমন হিন্দি বা অন্য ভাষাকে সম্মান করি, আমাদের ভাষাকেও তেমনই সম্মান চাই।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাইরে বসবাসকারী বাঙালিদের কিছু ঘটনায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মমতা সেই মনোভাবকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের কৌশল নিচ্ছেন। বিশেষ করে ২০২6-এর রাজ্য বিধানসভা ও 2029-এর কেন্দ্রীয় নির্বাচনের দিকেই লক্ষ্য রাখছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বাঙালির স্বাভিমান ও জাতিগত পরিচয় নিয়ে বারবার আঘাত আসছে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই আবেগকে শক্তিতে পরিণত করে আগামী দিনে দিল্লি দখলের সুর বেঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা থেকে প্রতিবাদ যেমন হবে, ঠিক তেমনই ‘পরিবর্তন’-এর ডাক দেবে দিল্লিও — এমনই বিশ্বাস তাঁর।




