কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :
পহেলগাম গণহত্যার দায় স্বীকার করা লস্কর-ই-তইবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)-কে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য মার্কিন প্রশাসনের পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাস দমন সহযোগিতায় এক দৃঢ় অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করল ভারত। একই সঙ্গে মার্কিন বিদেশ দফতর এই সংগঠনকে ‘বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ (Specially Designated Global Terrorist বা SDGT) হিসেবেও তালিকাভুক্ত করেছে।
পাকিস্তানঘাঁটিভিত্তিক লস্কর-ই-তইবার এই ছায়া সংগঠনটি গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছিল, যাতে প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পরে এটি ভারতের মাটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হত্যাকাণ্ড বলে চিহ্নিত করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন,
“TRF-কে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন (FTO) ও SDGT হিসেবে তালিকাভুক্ত করায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টকে ধন্যবাদ। এটি ভারত-মার্কিন সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার দৃঢ় স্বীকৃতি।”
এই তালিকাভুক্তির ফলে TRF-এর বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ও আইনত কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে মার্কিন প্রশাসন। মার্কিন আইনে এই সংগঠনের সমস্ত সম্পদ জব্দ, সহযোগী সংগঠনগুলির ওপর নজরদারি, এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও সুরক্ষার নতুন দিক খুলে যাবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী,
“TRF শুধুমাত্র পহেলগামের গণহত্যা নয়, ২০২৪ সাল জুড়ে একাধিক হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আঘাত হেনেছে। এই সংগঠন সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর একটি সক্রিয় ফ্রন্ট।”
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালের জাতীয় নিরাপত্তা নীতি অনুসারে, এই ধরনের পদক্ষেপ মার্কিন সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের দৃঢ়তা প্রমাণ করে বলে দাবি করেছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
“এই পদক্ষেপ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায়, সন্ত্রাস দমন ও পহেলগাম হামলার বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি রক্ষার দিকেই এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
পাশাপাশি, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও (UNSC) পহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা করে ইতিমধ্যেই দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। ভারত বহুদিন ধরেই TRF-এর মতো ছায়া সংগঠনগুলিকে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট বলে অভিযোগ করে আসছিল। এবার মার্কিন স্বীকৃতি সেই দাবিকে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি দিল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।




