কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব প্রতিবেদন :
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের শেষ ২১ জুলাইয়ের শহীদ দিবসের সমাবেশ রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সোমবার ধর্মতলায় সেই উপলক্ষে আয়োজিত হচ্ছে দলের বার্ষিক মহাসমাবেশ। রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছেন শহরের দিকে। ফলে স্বভাবতই উঠছে প্রশ্ন—এই বিপুল জমায়েত সামাল দিতে গণপরিবহণ কী বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে?
বিশেষ করে ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা ঘিরে সাধারণ মানুষের কৌতূহল তুঙ্গে। কারণ জেলার ভিড়ের একটি বড় অংশ ট্রেনেই শহরে পৌঁছয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে জানতে চাইছেন—২১ জুলাই কি রেল অতিরিক্ত লোকাল ট্রেন চালাবে?
রেল সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমবার বেশ কিছু শাখায় অতিরিক্ত লোকাল ট্রেন চলবে ঠিকই, তবে তার পেছনে ২১ জুলাইয়ের রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, রয়েছে ধর্মীয় কারণ। ওই দিন শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার। শিবভক্তদের কাছে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। ফলে হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে তারকেশ্বর, বালিগঞ্জ, ডানকুনির মতো বিভিন্ন শিবতীর্থের দিকে অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে পূর্ব রেল অতিরিক্ত লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পূর্ব রেলের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত জানিয়েছেন, “২১ জুলাই একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি, সেই বিষয়ে মন্তব্য করার আমি উপযুক্ত নই। তবে শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবারে ভিড় সামাল দিতে বেশ কয়েকটি বিশেষ লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে।”
রেল আধিকারিকদের মতে, এই অতিরিক্ত ট্রেন শ্রাবণ উপলক্ষে শিবতীর্থের যাত্রীদের সুবিধার্থে চালু করা হলেও, তাতে কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরাও।
এছাড়াও হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে আরপিএফের নজরদারি আরও কড়া করা হবে বলেও পূর্ব রেল জানিয়েছে।
কলকাতা মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, অফিস টাইমে স্বাভাবিকভাবেই প্রতি ৫ মিনিট অন্তর মেট্রো পরিষেবা থাকে। ২১ জুলাই সোমবার পড়ায়, অফিস টাইমেই মেট্রোতে ভিড় থাকবে, যা প্রতিদিনের তুলনায় বেশি হতে পারে। তবুও মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিষেবা স্বাভাবিক রাখাই তাদের লক্ষ্য।
তাঁদের মতে, এখনই কোনও বাড়তি মেট্রো চালানোর পরিকল্পনা নেই। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিষেবা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা জানিয়েছেন, “এই বছর রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ২১ জুলাই ধর্মতলার মঞ্চ থেকে নেত্রী যা বার্তা দেবেন, তা কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বৃদ্ধিতে ভূমিকা নেবে। জেলার প্রতিটি ব্লক থেকে কর্মীরা আসছেন—রেকর্ড জমায়েত হবে।”
তবে অতিরিক্ত ট্রেন বা বিশেষ গণপরিবহণ না থাকায় জেলার অনেক তৃণমূল সমর্থককেই রাতেই শহরে পৌঁছতে হতে পারে বলে মনে করছেন দলের একাংশ।
সোমবার শহরের রাস্তাঘাট, রেল ও মেট্রো স্টেশনগুলিতে অতিরিক্ত ভিড় অনিবার্য। যাত্রীদের যথাসম্ভব সতর্ক থেকে যাতায়াত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে রেলের তরফে।
রাজনৈতিক মহাসমাবেশ ও ধর্মীয় উৎসব—দুটো একত্রে পড়ায় এ বছর ২১ জুলাইয়ের পরিবহণ চিত্র কিছুটা ব্যতিক্রমী হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।




