spot_img
22 C
Kolkata
Saturday, November 15, 2025
spot_img

অবশেষে রাজ্যের ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের পথ পরিষ্কার, তালিকায় কলকাতা ও যাদবপুরও !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব সংবাদদাতা :কলকাতা,০৬ অক্টোবর  :


দীর্ঘ টানাপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাজ্যের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের অনুমোদন মিলল। রাজ্য সরকার ও আচার্য তথা রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোসের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছে যাওয়ার পর সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় জানানো হয়— এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে আর কোনও আইনি বাধা নেই।

তালিকায় রয়েছে রাজ্যের সবচেয়ে নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও— কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর নেতৃত্বাধীন দ্বি-বিচারপতি বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্যপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও আচার্যের মধ্যে আর কোনও মতপার্থক্য নেই। আদালত জানায়, এই সিদ্ধান্তে শিক্ষা ব্যবস্থার স্থবিরতা কাটবে এবং দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক জট খুলবে।

সূত্রের খবর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য পদে নতুন নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছেন ড. শান্তা দত্ত, তবে এবার তাঁর জায়গায় নতুন মুখ আসা প্রায় নিশ্চিত বলে জানা গিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও “চমকে দেওয়ার মতো” নাম সামনে আসতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলে আলোচনা চলছে।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন এক অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ উপাচার্য হিসেবে ফিরতে পারেন, যিনি অতীতে একই পদ সামলেছেন বলেই খবর। তবে, সরকারি ভাবে এখনও কোনও নাম প্রকাশ করা হয়নি।

যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এখনও মতবিরোধ রয়েছে, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে রাজ্য ও আচার্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘ইন চেম্বার’ বৈঠক করবেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি বাগচী। উদ্দেশ্য— মতভেদ মিটিয়ে দ্রুত সমাধান টানা।

আদালত ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা এবং একাডেমিক স্বাভাবিকতা বজায় রাখার স্বার্থেই এই প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা জরুরি।

এর আগে রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার ও আচার্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সিলেকশন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। সেই কমিটির সুপারিশ ও উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতেই এবার আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের পথ খুলে গেল।

রাজ্য সরকারের মতে, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষা প্রশাসনে স্থিতিশীলতা ও একাডেমিক গতি ফিরিয়ে আনবে। রাজ্যপাল দফতরও আদালতের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছে। শিক্ষা মহলের একাংশ মনে করছে, “দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের হাতে প্রশাসন চলায় নীতি-নির্ধারণ এবং উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্থবিরতা এসেছিল। এবার সেই জট কাটবে।”

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানান, “এটি শুধু নিয়োগ নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এক নতুন প্রশাসনিক অধ্যায়ের সূচনা।”
অন্যদিকে, অধ্যাপক মহল বলছে, “উপাচার্যদের নিয়োগে স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের এই দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সমাধান ঘটাবে।”

এখনও রাজ্যের আরও ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় অমীমাংসিত রয়েছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা ও ‘ইন চেম্বার’ বৈঠকের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভবিষ্যৎ।
তবে আদালতের সাম্প্রতিক মন্তব্যে ইঙ্গিত মিলছে— কেন্দ্র, রাজ্য ও আচার্য— তিন পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় স্বাভাবিকতা ফিরতে চলেছে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks