spot_img
23 C
Kolkata
Friday, November 14, 2025
spot_img

বিহার ভোট: প্রথম দফার মনোনয়ন শুরুতেই এনডিএ ও ইন্ডিয়া ব্লকে উত্তেজনা তুঙ্গে !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব সংবাদদাতা :কলকাতা ,১২ অক্টোবর  :

১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা, ৬ নভেম্বর ভোট— আসন ভাগাভাগি নিয়ে দুই শিবিরেই অস্থিরতা !


বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এই দফায় মোট ১২১টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৬ নভেম্বর। নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রার্থীরা ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। এরপরের দিন অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর হবে নথি যাচাই (Scrutiny)। আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ অক্টোবর।

প্রথম দফার ভোট হবে পাটনা, দারভাঙা, মধেপুরা, সহরসা, মুজফফরপুর, গোপালগঞ্জ, সিওয়ান, সারন, বৈশালী, সমস্তিপুর, বেগুসরাই, লখিসরাই, মুঙ্গের, শেখপুরা, নালন্দা, বক্সার ও ভোজপুর জেলায়।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দ্বিতীয় তথা চূড়ান্ত দফার ভোট হবে ১১ নভেম্বর ১২২টি আসনে, আর ১৪ নভেম্বর গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হবে।

ভোটের তফসিল ঘোষণার পরেও শাসক এনডিএ (NDA) ও বিরোধী ইন্ডিয়া জোট (INDIA Bloc) এখনও পর্যন্ত তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। দুই শিবিরেই আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছে।
একদিকে বিজেপি ও জেডিইউর মধ্যে সমন্বয় সভা চলছে, অন্যদিকে আরজেডি ও কংগ্রেসও নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির সূত্র মেলাতে ব্যস্ত।

শাসক জোটের অন্দরে ক্রমশ বাড়ছে অস্বস্তি। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার পাটনায় পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি আজই রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা করবেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, এনডিএ-র আসন বণ্টন এক-দু’দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হতে পারে এবং এরপরই বিজেপি তাদের প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।

জোট সূত্রে জানা গেছে, জেডিইউ (জনতা দল ইউনাইটেড) এবং বিজেপি যথাক্রমে ১০২ ও ১০১টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত হয়েছে।
তবে লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)— যার নেতৃত্বে আছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান, শুরুতে ২০–২২টি আসনে রাজি থাকলেও এখন ৪৫টি আসন দাবি করছে। এই দাবিই আপাতত এনডিএর সমীকরণে নতুন চাপ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে বিরোধী শিবিরেও আসন বণ্টন নিয়ে ব্যাপক মতানৈক্য চলছে। সূত্রের খবর, আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল) প্রায় ১৩৫–১৪০টি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। কংগ্রেসকে তারা প্রস্তাব দিয়েছে ৫০–৫২টি আসন, যদিও কংগ্রেস দাবি করছে ৭০টি আসন।
আজ পাটনায় আরজেডির শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকে চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে।

২০২০ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস ৭০টি আসনে লড়ে মাত্র ১৯টিতে জয় পেয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবারের প্রস্তাবিত আসনসংখ্যা কমানো হয়েছে বলে দলীয় মহল মনে করছে।

ইন্ডিয়া ব্লকের অন্যতম শরিক সিপিআই (এমএল) লিবারেশন দলও অসন্তুষ্ট। তাদের দাবি, ২০১৫ সালে ১৯টি আসনে লড়ে তারা ১২টিতে জয় পেয়েছিল। এবার দলটি ৪০টি আসন দাবি করছে, কিন্তু আরজেডি দিতে চাইছে মাত্র ২০–২৫টি।

এদিকে প্রাক্তন নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরের দল ‘জন সুরাজ’ বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছে তাদের ৫১ জন প্রার্থীর নাম। এই ঘোষণা দুই বড় জোটের উপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারের গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্কে ‘জন সুরাজ’-এর প্রভাব এখনও অজানা হলেও, তাদের আগাম প্রচার এনডিএ ও ইন্ডিয়া— দুই শিবিরকেই কৌশল পুনর্বিবেচনায় বাধ্য করছে।

মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিহারে নির্বাচনী উন্মাদনা তুঙ্গে। দলগুলির কার্যালয়ে চলছে প্রার্থী বাছাই, কৌশল নির্ধারণ ও মিটিং-মিছিলের প্রস্তুতি।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই ভোটে শুধু মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনপ্রিয়তাই নয়, বরং এনডিএ জোটের টিকে থাকার ক্ষমতাও পরীক্ষার মুখে পড়বে।
অন্যদিকে লালু প্রসাদের আরজেডি ও প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ — উভয়েই চাইছে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মোড় আনতে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks