spot_img
22 C
Kolkata
Friday, November 14, 2025
spot_img

মমতার ‘হুমকি’-র ভিডিও ও অনুবাদ চাইল নির্বাচন কমিশন, উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব সংবাদদাতা :কলকাতা ,১২ অক্টোবর  :

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে ‘হুমকি’-সদৃশ মন্তব্যের অভিযোগে এবার সরাসরি নড়েচড়ে বসল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, কমিশন ইতিমধ্যেই ওই বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ এবং তার ইংরেজি অনুবাদ চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য নির্বাচনী দফতরের কাছে। শুক্রবারই ওই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে এবং জানানো হয়েছে, দিনের মধ্যেই সমস্ত তথ্য ও প্রমাণ ‘লোকপাল’-এর কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার, যখন মুখ্যমন্ত্রী একটি সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে বলেন, “যদি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সীমা ছাড়িয়ে যান, তাহলে তাঁর দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আনব।” মমতার এই বক্তব্যের সময় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পান্ত ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়ায়।

নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়, কারণ অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন একজন সংবিধিবদ্ধ পদাধিকারী।” কমিশনের এক আধিকারিক জানান, “সমস্ত তথ্য-সহ প্রমাণপত্র লোকপালকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কমিশনের নিজস্ব মনিটরিং টিম রয়েছে, যারা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের উপর নজর রাখে। আলাদা করে আমাদের কিছু পাঠানোর প্রয়োজন নেই।”

তবে সূত্রের খবর, শনিবারের মধ্যেই দিল্লিস্থ নির্বাচন কমিশনের দফতরে ওই ভিডিও ফুটেজ পৌঁছে গিয়েছে। এর পরই বিজেপি আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে।

বিজেপির অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, “যখন কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে একজন নির্বাচন আধিকারিককে হুমকি দেন, তখন সেটা প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য নয়—শাসক দলের প্রতি অনুগত থাকাই টিকে থাকার পথ। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক মন্তব্য নয়, গণতন্ত্রের ভিত্তির উপর আঘাত।”

দলটি আরও জানিয়েছে, যদি সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নিজে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ না দায়ের করেন, তাহলে তারা নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে অনির্দিষ্টকালের ধর্নায় বসবে।

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগটি একেবারে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। দলের মুখপাত্র বলেন, “বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টিকে বাড়িয়ে তুলছে। মুখ্যমন্ত্রী কেবলমাত্র সতর্ক করেছিলেন, হুমকি দেননি। তিনি বলেছেন, কেউ যদি নিজের সীমা অতিক্রম করেন, তাহলে তিনি নীরব থাকবেন না।”

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ও মুখ্যমন্ত্রীর এই সংঘাত নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করেছে। শাসক তৃণমূল, বিরোধী বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের এই ত্রিমুখী সংঘাত এখন বঙ্গ রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks