spot_img
22 C
Kolkata
Friday, November 14, 2025
spot_img

প্রথম সরকারি সফরে ভারতে আসছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হরিণী আমারসূর্য !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব সংবাদদাতা : নয়াদিল্লি  : ১৬অক্টোবর 

ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক আরও গভীর করতে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে পা রাখছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হরিণী আমারসূর্য (Harini Amarasuriya)। ১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনের এই সফর হবে তাঁর প্রথম সরকারি বিদেশ সফর, প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর। শিক্ষা, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলবে এই সফরে— এমনটাই মনে করছেন দুই দেশের কূটনৈতিক মহল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের (MEA) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হরিণী আমারসূর্য তাঁর সফরে ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনার মূল বিষয় থাকবে— দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, প্রযুক্তি সহযোগিতা, শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সফর ভারত-শ্রীলঙ্কার মধ্যে নিয়মিত উচ্চস্তরের যোগাযোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতার ধারাবাহিকতাকেই আরও জোরদার করবে।”

ভারতের Neighbourhood First Policy এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের ‘MAHASAGAR Vision’— দুই দেশের আঞ্চলিক কূটনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে এই সফরকে দেখা হচ্ছে।

নিজ দেশের শিক্ষা মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন হরিণী আমারসূর্য। তাই শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেই তাঁর সফরের মূল গুরুত্ব।

তিনি IIT দিল্লি ও নীতি আয়োগে মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন— যেখানে তিনি শিক্ষায় প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও দক্ষতা বিনিময় নিয়ে নতুন অংশীদারিত্বের পথ খুঁজবেন।

ভারত ও শ্রীলঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্র বিনিময় ও গবেষণা সহযোগিতায় যুক্ত, তবে এই সফর সেই সম্পর্ককে আরও শক্ত করবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

নয়াদিল্লি সফরের অন্যতম আবেগঘন অংশ হবে তাঁর পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিন্দু কলেজ (দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়)–এ ফেরা। সেখান থেকেই তিনি উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছিলেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলেছেন, “এটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিক সফর নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক পুনর্মিলন। দুই দেশের ঐতিহাসিক শিক্ষা ও মানবিক সম্পর্কের প্রতীক এই মুহূর্ত।”

হরিণী আমারসূর্য ভারতের শীর্ষ শিল্পপতি ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠক করবেন, যেখানে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, বিনিয়োগ সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পে অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই সফরের ফলস্বরূপ ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে সবুজ জ্বালানি, মৎস্য, শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট খাতে যৌথ প্রকল্প ঘোষণা হতে পারে।

এই সফরের আগে, গত ২ অক্টোবর শ্রীলঙ্কায় নিজের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিজে মহাত্মা গান্ধীর জন্মজয়ন্তীতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হরিণী আমারসূর্য ও ভারতের হাইকমিশনার সন্তোষ ঝা।ভারতের হাইকমিশন তাদের সামাজিক মাধ্যম X-এ লেখে,

“Hon’ble Prime Minister @Dr_HariniA, along with High Commissioner @santjha, offered floral tributes at the statue of Mahatma Gandhi at Temple Trees.”
এই মুহূর্তটি দুই দেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধানমন্ত্রী আমারসূর্যের ভারত সফর শুধু একটি আনুষ্ঠানিক সফর নয়— এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
চীন-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের প্রেক্ষিতে ভারত এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। নয়া দিল্লি ও কলম্বো যদি শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির নতুন সহযোগিতার সূত্র ধরে এগোয়, তবে তা গোটা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতার পক্ষে সহায়ক হবে।

হরিণী আমারসূর্যের এই সফর কূটনীতি, শিক্ষা ও ইতিহাস— তিনটি ক্ষেত্রকেই একসঙ্গে যুক্ত করছে।

তাঁর সফরের মূল বার্তা স্পষ্ট— “নতুন প্রজন্মের হাত ধরে ভারত-শ্রীলঙ্কা বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায়।”

এই সফরের ফলাফল শুধু রাজনৈতিক চুক্তিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দুই দেশের জনগণের হৃদয়ের বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে তুলবে।

 

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,800SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks