কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন এলাকাবাসী। ভোররাত ৩টা ৩২ মিনিট নাগাদ সবজি খেতের মধ্যে পাতানো খাঁচায় ধরা পড়ল বাঘ। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খাঁচায় টোপ হিসেবে রাখা হয়েছিল একটি ছাগল। সেটির গন্ধেই বাঘ এসে ধরা দেয়।
বাঘের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
বনদপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, ধরা পড়ার পর বাঘটিকে প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে, তারপরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আজই তাকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গভীর আতঙ্কের রাত কাটল গ্রামবাসীদের
গত রবিবার রাত থেকেই কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাঘের উপস্থিতি আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে বাঘটিকে দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন বনদপ্তর ও থানায়। দ্রুত এলাকায় পৌঁছায় বনকর্মী ও পুলিশ বাহিনী।
বাঘ যাতে গ্রামে প্রবেশ না করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটিঘাটের কাছে নাইলনের জাল বসানো হয়। যদিও রাতে গ্রামে বাঘ প্রবেশ করেনি, সকালে জানা যায়, সেটি জালের আশপাশেই অবস্থান করছে। এরপরই বনদপ্তর তাকে বন্দি করার পরিকল্পনা করে।
বাঘের হামলায় আহত বনকর্মী
বাঘ ধরার চেষ্টার মধ্যেই ঘটে বিপত্তি। স্থানীয় টাইগার টিমের সদস্য গণেশ শ্যামলের উপর আচমকা হামলা চালায় বাঘটি। ঘাড়ে কামড়ে ধরে বনকর্মীকে। সহকর্মীরা লাঠি দিয়ে আক্রমণ করলে বাঘ ছেড়ে দেয় এবং জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। আহত গণেশ শ্যামলকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রামবাসীদের আতঙ্কের রাত
রবিবার বিকেলে প্রথমবার বাঘটিকে দেখেন স্থানীয় যুবক রাজকুমার সাঁপুই। তিনি জেটিঘাটের কাছে বসে ছিলেন, তখন শ্মশানঘাটের দিকে বাঘটিকে ঘুরতে দেখেন। খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। অনেকেই লাঠিসোঁটা হাতে জঙ্গলের দিকে যান এবং বাঘের পায়ের ছাপ খুঁজে পান। সঙ্গে সঙ্গে বনদপ্তরকে খবর দেওয়া হয়।
অবশেষে আজ ভোরে বাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে গ্রামে। আতঙ্ক কাটিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন গ্রামবাসীরা, অনেকে খাঁচার কাছেও ভিড় জমিয়েছেন বাঘটিকে এক নজর দেখার জন্য।