কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের উদ্দেশে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর দল দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবারও রাজ্যের ক্ষমতায় ফিরবে।
নবান্নে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো পরিবার রাখি না, এই দলই আমার পরিবার। আপনারাই আমার আপনজন। আমাদের একসঙ্গে থেকে বাংলার উন্নয়ন আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
অন্যদিকে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর, যেখানে বিজেপি আম আদমি পার্টিকে পরাজিত করেছে, সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূলই যথেষ্ট। অন্য কোনো দলের প্রয়োজন নেই।
তিনি বিধায়কদের পরামর্শ দেন, আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিতে এবং দলে বিভাজন বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলতে। তিনি বলেন, “জনগণের কাছে আমাদের সরকারের সাফল্য পৌঁছে দিতে হবে, মানুষের জন্য আমরা যা করেছি তা তুলে ধরতে হবে।”
সম্প্রতি কিছু বিধায়ক দলের বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন, বিশেষত দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একজন নেতা যদি বারবার ভুল করে, তাহলে তাকে কতবার ক্ষমা করা যায়?” তিনি অবশ্য দলের কিছু বিধায়কের কাজেরও প্রশংসা করেন, বিশেষত ইটাহারের বিধায়কের উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিধায়কদের নির্দেশ দেন, ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিটি ব্লক স্তরের সংগঠনের জন্য তিনটি করে নাম জমা দিতে হবে। এছাড়াও, প্রতিটি বিধায়ককে ‘লিপিবদ্ধ’ নামে একটি বই প্রদান করা হয়, যেখানে রেলমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। দলের বিধায়কদের উদ্দেশ্যে এই বই বিতরণের কারণ, যাতে তারা সরকারের সাফল্য সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হতে পারেন এবং জনগণের মধ্যে তা প্রচার করতে পারেন।
এদিন দিল্লি নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মধ্যে ভোট বিভক্ত হওয়ার কারণেই কেজরিওয়ালের দল পরাজিত হয়েছে। তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “বাংলায় বিজেপিকে হারানোর জন্য আর কাউকে দরকার নেই, তৃণমূল একাই যথেষ্ট।”
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে তাদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। এখন ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দল , বাকিটা সময়ের অপেক্ষা।