কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় !
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সেই রায় বহাল রাখল, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) দ্বারা ২০১৬ সালে নিযুক্ত ২৫,০০০-রও বেশি শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছিল। আদালত এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে “দূষিত” এবং বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে যে রাজ্য সরকারকে তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আদালত বলেছে যে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে এবং কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বদলানোর কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই, কারণ সেই নিয়োগ দুর্নীতি এবং প্রক্রিয়াগত লঙ্ঘনের জন্য বাতিল করা হয়েছিল।
রায়ের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দিক :
-
সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে যে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের অধীনে থাকা ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিল বলে গণ্য হবে, এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে “প্রভাবিত” বলা হয়েছে।
-
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং বাতিল হওয়া প্যানেলের যোগ্য প্রার্থীরা পুনরায় পরীক্ষায় বসতে পারবেন।
-
যেসব কর্মচারীরা ২০১৬ সালের নিয়োগের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সরকারি চাকরি ছেড়েছিলেন, তারা চাইলে আগের পদে ফিরে যেতে পারবেন।
-
বেঞ্চ উল্লেখ করেছে যে আসল ওএমআর শিট ও উত্তরপত্র অনুপস্থিত থাকায় প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করা অসম্ভব।
২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছিল, যেখানে ঘুষ, র্যাঙ্ক পরিবর্তন এবং যথাযথ পরীক্ষার ছাড়াই নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্তে দেখা গেছে, এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে প্রার্থীরা ফাঁকা উত্তরপত্র জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্ট ২০২৪ সালের এপ্রিলের রায়ে এই পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে এবং বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের ১২% সুদ সহ বেতনের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। প্রথমে, সুপ্রিম কোর্ট ২০২৩ সালের মে মাসে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছিল। তবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয় এবং সিবিআই-এর তদন্তে প্রাপ্ত দুর্নীতির প্রমাণকে স্বীকৃতি দেয়।