কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঁচি :
দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) জাতীয় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। রাঁচিতে অনুষ্ঠিত দলের ১৩তম সাধারণ অধিবেশনে এই ঘোষণা করেন দলের প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক ও বর্ষীয়ান নেতা শিবু সোরেন।
এই দুই দিনব্যাপী দলের সাধারণ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেই শিবু সোরেন আনুষ্ঠানিকভাবে দলের নেতৃত্ব নিজের ছেলে হেমন্ত সোরেনের হাতে তুলে দেন। তিনি নিজে এখন থেকে থাকবেন দলের প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায়।
জেলার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সদস্যদের নাম ঘোষণার পর, দলের প্রবীণ নেতা নলীন সোরেন শিবু সোরেনকে প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক হিসেবে মনোনয়ন দেন, এবং সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন বিধায়ক মথুরা মাহাতো।
অসুস্থ শিবু সোরেন সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “আমি আজ আমার ছেলে হেমন্তকে দলের জাতীয় সভাপতির দায়িত্ব দিচ্ছি।” দলের সব সদস্য এই সিদ্ধান্তে সর্বসম্মত সমর্থন জানান।
দলের কার্যনির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব আগে থেকেই পালন করে আসছিলেন হেমন্ত সোরেন। এবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হলেন, শিবু সোরেনের বয়সজনিত অসুস্থতার প্রেক্ষাপটে।
গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাফল্যের পেছনে হেমন্ত সোরেনের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সরকার ও সংগঠন দুই ক্ষেত্রেই তিনি দৃঢ়ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন।
এই দায়িত্ব গ্রহণে হেমন্ত সোরেনের পাশে সবসময় থেকেছেন তার স্ত্রী কাল্পনা সোরেন। দলের ভেতরের জটিলতা মোকাবিলা এবং সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
অধিবেশনের মঞ্চে নতুন সভাপতিকে ফুলের মালা দিয়ে অভিনন্দন জানান দলের নেতারা। ভাই বাসন্ত সোরেন প্রথম শুভেচ্ছা জানাতে মঞ্চে ওঠেন। এছাড়াও, কাল্পনা সোরেন, নলীন সোরেন, মথুরা মাহাতো, মন্ত্রী হাফিজুল হাসান, সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিনোদ পান্ডে প্রমুখ নেতৃবৃন্দ হেমন্ত সোরেনকে শুভেচ্ছা জানান।
এই অধিবেশনে ঘোষিত হয় নতুন ২৮৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি। সাহেবগঞ্জ জেলার থেকে হেমন্ত সোরেন এবং পঙ্কজ মিশ্র সহ ১৩ জনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডুমকা জেলা থেকেও ১৩ জন সদস্যের নাম ঘোষণা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন শিবু সোরেন, নলীন সোরেন, বাসন্ত সোরেন, আলোক কুমার সোরেন, আব্দুল সালাম আনসারি এবং লুইস মারান্ডি।
দলের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন ও নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে আগামী দিনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা রাজ্যের রাজনীতিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।