কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব সংবাদদাতা :
সকাল সাড়ে আটটা। দিল্লির লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে গাড়ির কনভয় থামে। গাড়ি থেকে নামেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার অজিত ডোভাল। মুখে কোনও অভিব্যক্তি নেই। কিন্তু এই ‘নির্বাক আগমন’-এর পিছনে কি লুকিয়ে আছে কোনও বড় সিদ্ধান্তের ছায়া?
গত ৪৮ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ডোভালের এই বৈঠক যে নিছক ‘রুটিন মিটিং’ নয়, তা বুঝতে বিশেষজ্ঞদের কষ্ট হচ্ছে না। বিশেষত এমন এক সময়ে যখন গোটা দেশজুড়ে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির মহড়া শুরু হতে চলেছে। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম, নাগরিক স্তরে এই মাত্রায় “মক ড্রিল”—এমন নির্দেশ কেন্দ্র আগেও দেয়নি।
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার পরেই মোদী সরকারের রূপ বদলেছে। কূটনৈতিক ময়দানে পাকিস্তানকে ঘিরে ফেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু কেবল শব্দে নয়, মাঠেও যে পাল্টা আঘাতের জন্য কিছু একটা তৈরি হচ্ছে—তা বোঝা যাচ্ছে টানা নিরাপত্তা বৈঠকের ঘনঘটা দেখে।
একদিন আগেই মোদী দেখা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর প্রধান এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহানের সঙ্গে। সূত্র বলছে, বৈঠকে সেনাবাহিনীকে “সম্পূর্ণ স্বাধীনতা” দেওয়া হয়েছে। ঠিক কোথায়, কখন এবং কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে—সেই সিদ্ধান্ত এখন আর দিল্লির হাতে নয়, রয়েছে সেনার মেজর স্ট্র্যাটেজিক ইউনিটের টেবিলে।
২০১৬-র সার্জিকাল স্ট্রাইক, ২০১৯-এ বালাকোট। আর ২০২৫? প্রতিবারই অজিত ডোভালের উপস্থিতি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আর এবার যখন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয়বার তাঁকে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে—তখন কি নতুন কোনও ‘ডোভাল ডকট্রিন’ রচনা হচ্ছে?
নির্বাচন সামনে, সীমান্ত উত্তপ্ত, কূটনৈতিক চাপ তুঙ্গে—এমন এক মুহূর্তে গোটা দেশের চোখ এখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের দিকে। এবং বিশেষত, সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা না হলেও, প্রস্তুতির গন্ধ যে বাতাসে ঘন হচ্ছে—তা সকালবেলার দিল্লি কুয়াশার মধ্যেও স্পষ্ট।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে কী বার্তা আসবে? আদৌ আসবে? না কি দেশবাসী বুধবারের মক ড্রিলের মধ্যে দিয়েই এক নতুন ভারতের যুদ্ধ-মনোবলের মহড়া দেখতে চলেছে?
ডোভাল নিরুত্তর। মোদী সংযত। আর দেশ—প্রহর গুনছে।